DBMS এর ব্যবহারের কৌশল

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - ডেটাবেজ-এর ব্যবহার | | NCTB BOOK

একটি সিস্টেম একক ভাবে গড়ে উঠে না। সিস্টেম হলো কতগুলো বিষয়ের সমন্বিত রূপ। তেমনি কতগুলো কম্পিউটার প্রোগ্রামের সমন্বয়ে ডেটাবেজ সিস্টেম গঠিত হয়। মূলত ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (DBMS) ব্যবহারকারী এবং ডেটাবেজের মধ্যে একটি ইন্টারফেস (উভয়দিক সংযোগ রক্ষাকারী) হিসেবে কাজ করে। ব্যবহারকারী অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপারেশন (যেমন: ডেটা মুছে ফেলা, প্রবেশ, উত্তোলন করা) সম্পন্ন করতে অনুরোধ করে। ব্যবহারকারী কর্তৃক প্রদত্ত অনুরোধগুলো DBMS এর মাধ্যমে ডেটাবেজের উপর কার্যকরী করে ব্যবহারকারীকে প্রয়োজনীয় ডেটা প্রদান করে।

 

DBMS এর গুরুত্ব
ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের প্রধান কার্যবলী নিম্নে উল্লেখ করা হলো
১. নতুন রেকর্ড সংযোজন করা ।
২. প্রয়োজনে রেকর্ড আপডেট করা।
৩. অপ্রয়োজনীয় রেকর্ড মুছে ফেলা ।
৪. ডেটা সংরক্ষণ করা।
৫. ডেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৬. ডেটার অনুলিপি (ডুপ্লিকেশন) রোধ করা ।
৭. রিপোর্ট তৈরি করা ।
৮. নির্দিষ্ট ডেটা অনুসন্ধান করা ।
বিপুল পরিমাণ উপাত্ত নিয়ে তৈরি ডেটাবেজের বহুমুখী ব্যবহারই হচ্ছে ডেটাবেজ ব্যবস্থাপনার কাজ। সাধারণত অনেক জনবল বিশিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা, ব্যাংক-বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজের হিসাব, বেতন-বিল তৈরি, ব্যক্তিগত নথি, মজুদ মালামালের হিসাব ইত্যাদি নানা কাজে ডেটাবেজের ব্যবহার অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু হিসাব নিকাশ, লেনদেন এবং ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রেই নয়, শিক্ষা, গবেষণা, সামাজিক উন্নয়ন, বই, জার্নাল ও সাময়িকীতে সরাসরি এবং খুজ সহজে সংরক্ষণ করে প্রয়োজনে অনুসন্ধান ও প্রতিবেদন তৈরিতে ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্টের গুরুত্ব অপরিসীম। জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য, কৃষি ইত্যাদি বিষয়ভিত্তিক ক্ষেত্রেও স্বতন্ত্র ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম গড়ে তোলা যেতে পারে ।


ডেটাবেজ ও এক্সেস সম্পর্কে ধারণা
কম্পিউটারে ডেটাবেজের কাজ করা হয় প্রধানত মাইক্রোসফট এক্সেস সফটওয়্যারের সাহায্যে। মাইক্রোসফট
এক্সেস হচ্ছে মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের একটি জনপ্রিয় ডেটাবেজ সফটওয়্যার ।

এক্সেস প্রোগ্রামে কাজ শুরুর প্রভৃতি

 এক্সেস প্রোগ্রামের সাহায্যে ডেটাবেজের কাজ করার জন্য কম্পিউটারে অবশ্যই মাইক্রোসফট অফিস এক্সেস ইনস্টল করা থাকতে হবে। যদি না থাকে তাহলে ইনস্টল করে নিতে হবে।


এক্সেস প্রোগ্রাম খোলা
মাইক্রোসফট এক্সেস প্রোগ্রাম খোলার জন্য-

১. পর্দার নিচের দিকে বাম কোণে স্টার্ট (Start) বোতামের উপর মাউস পয়েন্টার দিয়ে ক্লিক করলে একটি মেনু বা তালিকা আসবে ।
৩. এ মেনুর অল প্রোগ্রামস (All Programs) কমান্ডের উপর মাউস পয়েন্টার স্থাপন করলে আর একটি মেনু পাওয়া যাবে।


৪. এ মেনু তালিকা থেকে মাইক্রোসফট অফিস (Microsoft Office) মেনুতে ক্লিক করলে আর একটি মেনুতে মাইক্রোসফট অফিস (Microsoft Office)-এর প্রোগ্রামগুলোর তালিকা পাওয়া যাবে।


৫. এ তালিকা থেকে মাইক্রোসফট অফিস এক্সেস (Microsoft Office Access) কমান্ড সিলেক্ট করলে মাইক্রোসফট অফিস এক্সেস (Microsoft Office Access) খুলে যাবে ।
৬. মাইক্রোসফট অফিস এক্সেস উইন্ডোর উপরের বাম দিকে অবস্থিত Blank Database আইকন ক্লিক করার পর ব্লাংক ডেটাবেজ ফাইলের নাম দেওয়ার জন্য ডায়ালগ বক্সের File Name ঘরে ডেটাবেজের জন্য একটি নাম টাইপ করতে হবে। এক্ষেত্রে Practice-1 টাইপ কর ।
৭. File Name এডিট বার-এর ডান দিকে ফোল্ডার আইকন ক্লিক করলে নতুন নামে তৈরি করা ফাইল সংরক্ষণের জন্য ডায়ালগ বক্সের File Name ঘরে Practice-1 বিদ্যমান থাকবে। এ নামের ফাইলটি কোনো ফোল্ডারে সংরক্ষণ করতে হলে ফোল্ডারটি তৈরি করে নিতে হবে।

৮. ডায়ালগ বক্সের OK বোতামে ক্লিক করলে আগের ডায়ালগ বক্সটি ফিরে আসবে।
৯. ডায়ালগ বক্সের Create বোতামে ক্লিক করলে টেবিল তৈরি করার আগের অবস্থায় একটি শূন্য উইন্ডো আসবে। এ উইন্ডোর টাইটেল বার-এ লেখা থাকবে 'Practice-1: Database ... ' ।

ডেটাবেজ টেবিল তৈরি
Practice-1 উইন্ডো থেকে টেবিল তৈরির কাজ শুরু করতে হবে। এ জন্য-

১. View ড্রপ-ডাউন থেকে Design View সিলেক্ট করলে সেভ অ্যাজ ডায়ালগ বক্স আসবে। ডায়ালগ বক্সের টেবিল নেম ঘরে Table1 নাম থাকবে। এ নামেই ডেটাবেজ টেবিলটি সেভ হবে। সেভ করার জন্য ডায়ালগ বক্সের OK বোতামে ক্লিক করতে হবে।

২. ডেটাবেজ টেবিলের ফিল্ড নির্ধারণের উইন্ডো উপস্থাপিত হবে।
৩. Field Name ঘরে ক্রমিক নম্বর (SI No) টাইপ করে কীবোর্ডের ট্যাব বোতামে চাপ দিলে কার্সর Data Type ঘরে চলে যাবে। এ ঘরের ড্রপ-ডাউন তীরে ক্লিক করলে ডেটার বিভিন্ন প্রকার ধরন বা টাইপের তালিকা দেখা যাবে। যেমন-Text, Number, Currency, Date/Time ইত্যাদি।


এ তালিকা থেকে প্রয়োজনীয় ডেটা টাইপ সিলেক্ট করতে হবে। নম্বর সিলেক্ট করলে এ ফিল্ডের ডেটা দিয়ে অঙ্ক বা হিসাবের কাজ করা যাবে। তারিখ/সময় ফিল্ডের ডেটা বা তথ্যের ভিত্তিতে বয়স বের করা যাবে এবং বয়স সংক্রান্ত অন্যান্য কাজ করা যাবে। বর্ণভিত্তিক ফিল্ডের ডেটার সাহায্যে গাণিতিক কাজ, যেমন— যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি করা যাবে না।
ডেটা টাইপ সিলেক্ট করার সঙ্গে সঙ্গে নিচের দিকে ফিল্ডস প্রোপার্টি অংশে ডেটার আরও কিছু বিষয় নির্ধারণ করে দিতে হবে। যেমন- Field Size-এর ডান পাশের ঘরে নির্ধারণ করে দিতে হবে কোন ফিল্ডের আকার কত বড় হবে এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য কেমন হবে। এ ফিল্ডের একটি নিজস্ব মান থাকে। প্রয়োজনে এটি পরিবর্তন করা যায়। ফিল্ড সাইজ প্রয়োজনের তুলনায় একটু বড় হওয়া ভালো। এতে ডেটা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তবে, অপ্রয়োজনীয়ভাবে বেশি বড় করাও ঠিক নয় ।
৪. ফিল্ডের নাম টাইপ করা শেষ হলে উপরের বাম কোণে ভিউ আইকন ক্লিক করলে অথবা ভিউ ড্রপ-ডাউন থেকে Datasheet View সিলেক্ট করলে টেবিলটি সেভ করার জন্য একটি ডায়ালগ বক্স আসবে ।
৫. ডায়লগ বক্সের Yes বোতামে ক্লিক করলে ডেটা এন্ট্রি করার জন্য ডেটাশিট ভিউ বা Table1 ভিউ উইন্ডো আসবে। এ উইন্ডোতে ডেটা এন্ট্রি করতে হবে।

Content added By
Content updated By
Promotion